Wednesday, December 19, 2018

ব্রজ-বার্ষনা অভিন্ন ‘শ্রীশ্রী পুণ্ডরীক ধাম’


ব্রজ-বার্ষনা অভিন্ন ‘শ্রীশ্রী পুণ্ডরীক ধাম’
পরমেশ্বর ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর লীলাবিলাস ক্ষেত্র ব্রজ অভিন্ন শ্রীগৌড়মণ্ডলের দক্ষিণ-পূর্ব কোণ, শাস্ত্র যাকে ব্রক্ষগিরি এবং জনকপুরী বলে বন্দনা করে, শ্রীমতি রাধারাণীর পিতা বৃষভানুরাজ খ্যাত শ্রীল পুণ্ডরীক বিদ্যানিধির মহাআবির্ভাব স্থলী যা ‘পুণ্ডরীক ধাম’ নামে
প্রসিদ্ধ। শ্রীমতি রাধারাণীসহ বিভিন্ন গৌর পার্ষদদের পদচারণার লীলা বিজড়িত বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান শ্রীধামে অদ্যাপিহ বিরাজমান। শ্রীচৈতন্য চরিতামৃতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী – মহাপ্রভুর লীলাবিলাসকালে তদীয় পার্ষদগণ নবদ্বীপ ধামের পরে বৃন্দাবন অপেক্ষাও ‘শ্রীশ্রী পুণ্ডরীক ধামে’ অধিক আগমন করেছেন, যা শ্রীধামের গুরুত্বকে সুস্পষ্টভাবে ফুটিয়ে
তোলে।
পুণ্ডরীক বিদ্যানিধির প্রাণপ্রিয় সখা স্বরূপদামোদর মহাপ্রভুর কাছে তাঁর অভিলাষ ব্যক্ত করতে গিয়ে শ্রীধামের মহিমা বর্ণনা করতঃ বলেছিলেন – “চিন্তামণির দ্বারা আবৃত, দ্বিতীয় চতুর্ব্যূহ (অনিরুদ্ধ, সঙ্কর্ষণ, প্রদ্যূম্ন এবং নারায়ণ) দ্বারা যে স্থানের ভূমণ্ডল ও সুদর্শন চক্র দ্বারা যাঁর আকাশমার্গ সুরক্ষিত থাকে, যে স্থান জুড়ে চিদানন্দ বিগ্রহ ‘শ্রী লক্ষী- জনার্দন’ নিত্যকাল
বিরাজ করে, যে স্থানটি গৌড়মণ্ডলে স্থিত হলেও অভিন্ন বৃন্দাবন স্বরূপ, যে রসপূর্ণ স্থান দেব-গন্ধর্ব-মুনি-সিদ্ধগনের দ্বারাও আরাধিত, আমার নিজ
নিবাস কি সেই ‘পুণ্ডরীক ধাম’ হবে না প্রভু?” এই প্রার্থনার মাধ্যমে শ্রীধামের গুরুত্বকে হৃদয়ঙ্গম করা যায়।
‘শ্রী পুণ্ডরীক ধামে’ এখনো অবধি শ্রীমতি রাধারাণীর পাদস্পর্শে আবির্ভূত,
তীর্থশ্রেষ্ঠ ও সকল ভজনস্থলীর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সাধক গণের নিত্য ধ্যেয় – ‘শ্রীশ্রী রাধাকুণ্ড’ বিদ্যমান, যে কুণ্ডে সমগ্র তীর্থজল নিত্য অবস্থান করে, যাঁ দর্শনমাত্রও সর্বপাপ বিদূরিত হয়। তাছাড়া ধনঞ্জয় পণ্ডিত, জগৎচন্দ্র গোস্বামী প্রমুখ ভক্তগনের প্রচেষ্টা এবং সাধনার ফলে শ্রীধামে
শ্যামকুন্ডও প্রবাহিত হচ্ছে। উক্ত দুটি কুণ্ডের মধ্যবর্তী স্থলে রয়েছে শ্রী পুণ্ডরীক বিদ্যানিধির একান্ত সহধর্মীনি ‘শ্রীমতি কীর্তিদা দেবীর’ অবতার
রত্নাবতী দেবী ও পুণ্ডরীক বিদ্যানিধির পরবর্তী বংশধরদের সমাধির উপর বৃন্দাবনস্থ গিরিরাজ শিলা আনয়ন পূর্বক তৈরীকৃত গিরি- গোবর্ধন, যা
ইস্কনের অন্যতম আচার্য ও গুরুদেব শ্রীল জয়পতাকা স্বামী মহারাজের বিশেষ অভিলাষের ফলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাছাড়া শ্রীধামের খুব নিকটেই এখনো অবধি পুণ্ডরীক প্রেমনিধির অধিক সঙ্গসুখ লাভের নিমিত্তে আসা মহাপ্রভুর অত্যন্ত প্রিয়ভাজন দুই ভ্রাতা বাসুদেব দত্ত ও
মুকুন্দ দত্ত ঠাকুরের ভজন কুঠির বিদ্যমান আছে। ভক্তিকল্পলতিকার প্রথম অঙ্কুর খ্যাত শ্রীল মাধবেন্দ্র পুরীপাদের শ্রীহস্তে প্রতিষ্ঠিত বিগ্রহ- শ্রীশ্রী লক্ষী-জনার্দন, যাঁ ছিল পুণ্ডরীক প্রেমনিধির প্রাণধন তা অদ্যাপিহ
শ্রীধাম হতে কিছু দূরে কালাচাঁদ ঠাকুর রূপে পূজিত হচ্ছেন। পুণ্ডরীক বিদ্যানিধির ভজন কুঠির, তাঁর সর্বশেষ বংশধরদের ছবি, তৎকালীন সময়ে বিভিন্ন গৌর-পার্ষদকৃত সেবিত শালগ্রাম শিলা ইত্যাদি আজও শ্রীধামে বিদ্যমান। এই পবিত্র ভূমির ধূলায় সিক্ত হওয়ার নিমিত্তে ৬৪ গৌড়ীয় মঠ
প্রতিষ্ঠাতা শ্রীল ভক্তি সিদ্বান্ত সরস্বতী ঠাকুরও শ্রী পুণ্ডরীক ধামে শুভ পদার্পণ করেন। শ্রীধাম বিশ্ববৈষ্ণবের ভক্তির উদ্গাথা স্বরূপ। ১৯৮২ সালে এই ধামের সেবাভার আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইস্কন) গ্রহণ করে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ইস্কন মন্দির প্রতিষ্ঠা পূর্বক তথায় ওঁ বিষ্ণুপাদ শ্রীল
জয়পতাকাস্বামী মহারাজের সেবিত ‘শ্রীশ্রী বার্ষভানবী-মুরারী’ বিগ্রহের সেবা প্রকাশ করেন। শ্রীধামে প্রবেশেই এক অপ্রাকৃত লীলা স্ফুরিত হয়।
অনন্ত সংহিতায় শিব পার্বতীকে বলছেন - “লোকে হাজারো অশ্বমেধ ও বাজপেয় যজ্ঞ, হাজারো পুণ্য কর্ম, হাজার যোগ অভ্যাস করে যে ফল
লাভ করে, কেবলমাত্র ‘শ্রীধামের’ কথা স্মরণ করেই তার চেয়ে কোটিগুণ বেশি ফল লাভ করা যায়। অতএব, ধাম দর্শন বা ধাম বাসের ফলের কথা
বর্ণনার অতীত।
তাই আসুন, শ্রীগৌরাঙ্গের প্রাণাধিক প্রিয় – যাঁর দর্শনের নিমিত্তে গৌরসুন্দর সততই বিলাপ করতেন সেই বৈষ্ণব চূড়ামণি শ্রী পুণ্ডরীক বিদ্যানিধির স্মৃতি বিজড়িত অপ্রাকৃত ‘শ্রী পুণ্ডরীক ধামের’ সেবায়
আত্মনিয়োগ করে সুদুর্লভ এই মনুষ্য- জন্মের যথার্থ সার্থকতা বিধান পূর্বক ব্রহ্মারও দুর্লভ প্রেম ভক্তি লাভ করি।

No comments:

Post a Comment

HELLO REPUBLIC OF BANGLADESH
WELCOME TO OUR #TULIP_NEWS WITH BEAUTIFUL DAY.
#NATIONAL_INTERNATIONAL_POLITICAL_SOCIAL_NEWS.
#GETTING_HEALTH_TIPS.
#CHITTAGONG_LOCAL_NEWS_PORTAL_&_AGRICULTURAL_INFO.
#OLD_&_MODERN_ATHLETICISM.
STAY US BE KNOW MORE.

1M -5M VIEW 2022 ONE DAY

Friday, May 6, 2022 email rss_feed code help_outline 1 Kentucky Derby 2022 2022 Kentucky Derby: Start Time and Horses to Watch The New York ...